সিনেমা জগৎ আবার ধীরে ধীরে সরব হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, শাকিব খান আমেরিকা থেকে ফিরে 'বরবাদ' নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করবেন। এই সিনেমার পরিচালকের দায়িত্বে আছেন মেহেদী হাসান হৃদয়, যিনি নাটকের জন্য পরিচিত। নতুন প্রজন্মের জন্য এটা একটা আশার খবর, বিশেষ করে সিনেমাটি যৌথ প্রযোজনার হওয়ায় কিছুটা আশা রাখা যায়। এছাড়া, সিনেমার শুটিং মুম্বাইতে হবে বলে শোনা যাচ্ছে—যদিও এর সত্যতা নিশ্চিত নয়। মুম্বাইতে শুটিং হলে ছবির মানের নিশ্চয়তা আরো বাড়বে।
পরিচালক সাহেবকে কিছু কথা বলতে চাই। 'শিকারী' ছবির পর থেকে শাকিব খানের সিনেমা মানেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটি নির্দিষ্ট রূপ ধারণ করেছে। শাকিব খানের লুক সুন্দর করে উপস্থাপন এবং ভারতের ড্যান্স ডিরেক্টর এনে গানগুলো উন্নত করা—এই নিয়মে সিনেমাগুলো চলে এসেছে। তবে 'তুফান' ছবির পর থেকে বাংলা সিনেমার দর্শক এখন বেশ কিছুটা আশা ফিরে পেয়েছেন। 'বরবাদ' ছবির মাধ্যমে এই ভরসা যেন আরও বৃদ্ধি পায়। যদি শাকিবকে নিয়ে সিনেমা করবেন, তবে সেটা যেন এতটাই দারুণ হয় যে, দর্শকরা প্রশংসায় ভাসিয়ে দেয়, না হলে আবারও সমালোচনার শিকার হতে হতে পারে। বর্তমানে শাকিবের ভক্তরা সমালোচনা শিখে গেছেন এবং যদি সিনেমার মান খারাপ হয়, তাহলে কোনো ছাড় পাবেন না।
বিশেষ করে বর্তমান দর্শকরা অ্যাকশন সিনেমা দেখতে বেশি পছন্দ করেন। পুরনো রোমান্টিক কাহিনির দিন এখন শেষ। এখন চাওয়া হচ্ছে হাইভোল্টেজ অ্যাকশন। 'বরবাদ' সিনেমার ক্ষেত্রে পরিচালকের কাছে কিছু আশা থাকবে:
১. **উন্নত অ্যাকশন সিকোয়েন্স**: দক্ষিণী সিনেমার মতো চোখ ধাঁধানো অ্যাকশন দৃশ্য আশা করছি। বাংলাদেশের সিনেমায় অ্যাকশন দৃশ্যগুলো প্রায় একই রকম হয়ে থাকে—স্লো মোশনের অ্যাকশন, লাফ দিয়ে লাথি মারার মতো। পরিচালক সাহেবকে অনুরোধ, সময় নিয়ে কমপক্ষে ২/৩টি অসাধারণ অ্যাকশন সিকোয়েন্স ডিজাইন করুন যা দেখে দর্শকদের চোখ জুড়িয়ে যাবে।
২. **বিজিএম**: একটি সিনেমার জন্য বিজিএম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্ক্রীনপ্লে ও পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত বিজিএম প্রদান করতে হবে। বাংলা সিনেমার অনেক পরিচালক এখনও বিজিএমের সঠিক ব্যবহার করতে পারেননি। 'তুফান' ছবিতে কিছু বিজিএম ছিল, তবে পুরোপুরি সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়নি। 'বরবাদ' দিয়ে দর্শকদের পূর্ণ সন্তুষ্টি আশা করছি।
৩. **এ্যারেঞ্জমেন্ট ও ক্যামেরার কাজ**: সিনেমা বড় পরিসরে তৈরি করতে হবে। নাটকের মতো দু-চারজন ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট দিয়ে সিনেমা বানালে তা নাটকীয় মনে হয়। রাজকীয় অ্যারেঞ্জমেন্ট থাকতে হবে।
সবশেষে, শাকিব খান এখন বাংলা সিনেমার সবচেয়ে বড় মেগাস্টার। তার জনপ্রিয়তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাচ্ছে। তাই তাকে নিয়ে সিনেমা বানাতে গেলে বাংলাদেশ ও কলকাতার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ও বৃহৎ স্কেলের সিনেমা হতে হবে।